গনগনে রোদ, প্রচণ্ড গরম ! এই গরমে ও রোদে বাহিরে বের হওয়া, এমনকি ঘরে বসে পরিশ্রমের কাজ করলেও প্রচুর ঘাম হয়। ফলে শরীরে পানি ও লবণের ঘাটতি তৈরি হয়। এরকম মৌসুমে সহজেই পানিশূন্যতা ও লবণশূন্যতা হতে পারে। বিশেষ করে, শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তিদের ঝুঁকি একটু বেশি। তাই তাঁদের ক্ষেত্রে বারবার খেয়াল রাখা উচিত, তাঁরা যথেষ্ট পানি বা তরল খাচ্ছেন কি না।
এই গরমে নিয়ম করে পানি পান করার সঙ্গে পরিবারের সবাই মিলে এমন সব পানীয় গ্রহণ করতে পারেন, যা পানি ও লবণের অভাব পূরণ করে খুব সহজেই। প্রশান্তি এনে দেয় ও শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। আসুন জেনে নিই এরকম কিছু পানীয় সম্পর্কে।
লেবু-পানি: লেবুর রস ও সামান্য লবণমিশ্রিত এক গ্লাস পানি এই গরমে কেবল প্রশান্তিই দেবে না, লবণশূন্যতাও পূরণ করবে। যাঁদের ডায়াবেটিস নেই, তাঁরা চিনি দিয়ে শরবত করেও খেতে পারেন। লেবুতে আছে পর্যাপ্ত পটাশিয়াম ও ভিটামিন সি, লবণে সোডিয়াম ক্লোরাইড এবং চিনিতে সহজ শর্করা, যা দ্রুত শক্তি জোগায়। এ ছাড়া লেবুর রস অন্ত্রে লৌহ শোষণে সাহায্য করে, খাবারে রুচি বাড়ায়।

ডাবের পানি: গরমে জনপ্রিয় পানীয় আমরা প্রায় প্রতিদিনই পান করতে পারি। ডাবের পানিতে আছে বেশ ভালো পরিমাণে পটাশিয়াম, ভিটামিন সি ও ক্যালসিয়াম। ক্যালরিও আছে পর্যাপ্ত। তাই খুব গরমে পরিশ্রান্ত অবস্থায় এটি দ্রুত চাঙা হতে সাহায্য করে। গরমে ডায়রিয়া হলেও ডাবের পানি কার্যকর ভূমিকা পালন করে। শরীর ঠান্ডাও রাখে।

কাঁচা আমের শরবত: এখন বাজারে কমবেশি কাঁচা আম পাওয়া যাচ্ছে। কাঁচা আমের সঙ্গে লবণ-চিনি-পুদিনা পাতা সামান্য কাঁচা মরিচ দিয়ে ব্লেন্ড করে শরবত করে খেতে পারেন। এতে আমের পুষ্টি ও ভিটামিন খনিজের সঙ্গে পানির অভাবও পূরণ হবে।

পুদিনা পাতার শরবত: লেবুর রসের সঙ্গে বা শুধু পানির সঙ্গে পুদিনা পাতা ব্লেন্ড করে এই শরবত তৈরি করতে পারেন। অথবা লেবু পানি বা শরবতের মধ্যে কয়েকটা তাজা কাঁচা পুদিনা পাতা ছেড়ে দিয়ে মিশিয়ে দিতে পারেন। এই পানীয় গরমে প্রশান্তি ও আরাম দেবে। এ ছাড়া পুদিনা পাতায় পটাশিয়াম আছে। এটি বমি ভাব/ অরুচি দূর করে দেহ-মন তাজা করে।

গরমের পানীয় বেছে নেওয়ার সময় যে বিষয়গুলো লক্ষ রাখবেন তা হলো, অনেক বরফ মিশিয়ে বা খুব ঠান্ডা পানীয় পান করবেন না। স্বাভাবিক তাপমাত্রার বা ঠান্ডার সঙ্গে স্বাভাবিক পানি মিশিয়ে পান করুন। এতে অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকি কমবে। ডায়াবেটিস ও স্থূল রোগীরা চিনি মেশাবেন না। উচ্চ রক্তচাপের রোগীরা লবণ একটু কম দেবেন। আর কিডনি রোগীদের জন্য অতিরিক্ত পটাশিয়াম ক্ষতিকর হতে পারে।
