বৈশ্বিক করোনা মহামারীর মধ্যে সবকিছু একটি স্থবির অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে তাই বলে কি থেমে আছে Period!

আজ ২৮ মে “Menstrual Hygiene Day” তথা “পিরিয়ড পরিচ্ছন্নতা দিবস”। অপরাজিতা দিবসটি পালন করছে সচেতনতা বৃদ্ধি করার মাধ্যমে।

প্রতিমাসেই ৩ থেকে ৭ দিন একজন নারীকে মাসিকের মাধ্যমে যেতে হয়। রক্তপাতের এ সময়টাকে “মাসিকের সময়কাল” বলে। সাধারণত মাসিকের স্থায়িত্ব সপ্তাহব্যাপী এবং এটি প্রতি মাসে হয়ে থাকে। এই প্রক্রিয়াটি একজন মেয়েকে তার কৈশোর থেকে নারীত্বের পথে নিয়ে যায়।

আমাদের সমাজে এখনো মাসিক একটি Taboo. প্রকাশ্যে এই ব্যাপারে কেউ কথা বলতে চান না, আলোচনা করতে চান না। অথচ, একজন নারীর অহংকার মাসিক।

মাসিক কোন অসুস্থতা কিংবা রোগ নয়। পৃথিবীর সকল নারীকেই এই স্বাভাবিক প্রাকৃতিক পদ্ধতির মধ্য দিয়ে যেতে হয়। আমাদের মা-বোনেরা উঠতি বয়সে মাসিক বা ঋতুচক্রের অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে গিয়েছেন। একজন নারীকে ভবিষ্যতে সন্তানসম্ভবা হতে শারীরিকভাবে প্রস্তুত করে এই প্রক্রিয়া। একজন কিশোরীর জন্য এটি প্রথম সংকেত যা বলে দেয় যে সে তার বাড়ন্ত কৈশোরে পা রাখতে যাচ্ছে। প্রতি মাসে ডিম্বাশয় একটি ডিম্বাণু উৎপাদন করে। সবচেয়ে পরিপক্ক বা পূর্ণাঙ্গ ডিম্বাণুটি ডিম্বনালির মধ্য দিয়ে জরায়ুতে চলে যায়। জরায়ু হচ্ছে দেহের এমন একটি অংশ যেখানে শিশু সুরক্ষিত থাকে ও প্রতিনিয়ত পুষ্টি পায়। যখন ডিম্বাণু পরিপক্ক হয় তখন শরীর জরাযুতে রাসায়নিক সংকেত পাঠায়। ফলে জরায়ুর ভিতরের অংশ পুরু হয়ে ওঠে। ডিম্বাশয় থেকে পরিপক্ক ডিম্বাণু বেরিয়ে এসে ডিম্বনালীতে অবস্থান নেয়। এই পুরো প্রক্রিয়াকে বলে হয় ডিম্বাণু উৎপাদন প্রক্রিয়া। ডিম্বানুটি শুক্রানু দ্বারা নিষিক্ত হলে গর্ভসঞ্চার হয়। গর্ভবতী অবস্থায় নিষিক্ত ডিম্বাণুটি ডিম্বনালীর মধ্য দিয়ে জরায়ুতে আসে। ৬ দিনের মধ্যে নিষিক্ত ডিম্বাণুটি জরায়ুতে সৃষ্ট নরম, পুরু আবরণের সাথে যুক্ত হয়ে যায়। আর যদি গর্ভবতী না হয়, তাহলে অনিষিক্ত ডিম্বাণুটি নষ্ট হয়ে যায়। জরায়ুর ভেতরে কোন শিশু জন্ম না নেওয়ায় নরম ও পুরু আবরণটিও ভেঙে যায়; শরীর থেকে রক্তের আকারে বের হয়ে আসে। এভাবেই মাসিকের শুরু হয়।

“আর নয় গোপনীয়তা, এবার লজ্জা বা সংকোচ দূর করে মাসিক নিয়ে সচেতনতা সৃষ্টির এখনই সময়।”

এই করোনা সংকটে আমাদের পরিবারের নারীদের যত্ন নেয়া আমাদের দায়িত্ব। পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করে মাসিক চলাকালীন সময়ে তাঁদের শরীরের প্রতি বিশেষ নজর দিতে উৎসাহ দিন। It’s Time For Action, আমাদের মধ্য থেকেই সচেতনতা ছড়িয়ে যাক।