Namaj Corona

করোনা ভাইরাস (COVID-19) থেকে বাঁচতে হলে নিয়ম মেনে নামাজ পড়তে হবে।

আলহামদুলিল্লাহ্‌, আমরা যারা ৫ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করি, আমরা কিন্তু আল্লাহ্‌’র রহমতে দিনে পাঁচবার ওযু করছি। আমাদের স্বাভাবিকভাবেই শরীর পরিছন্ন থাকে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা নিশ্চিত করেছে, করোনা থেকে বাঁচার অন্যতম উপায় হচ্ছে নিয়মিত হাত পরিষ্কার করা। নামাজ হচ্ছে সর্বশ্রেষ্ঠ ইবাদত। আমরা নামাজ অবশ্যই আদায় করবো তবে বর্তমান বৈশ্বিক অবস্থা বিবেচনায় আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।

পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আর আমি অবশ্যই তোমাদের পরীক্ষা করব কিছু ভয়, ক্ষুধা এবং জান-মাল ও ফল-ফলাদির স্বল্পতার মাধ্যমে। আর তুমি ধৈর্যশীলদের সুসংবাদ দাও।’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ১৫৫)

প্রিয় ইমানদার ভাই ও বোনেরা, আমরা জানি নামাজ আমাদের জন্য ফরজ এবং তা স্বয়ং আল্লাহ্‌ আমাদের নির্দেশ করেছেন। মহান আল্লাহ্‌ রাব্বুল আল-আমীন মাঝে মাঝে তাঁর বান্দাদের ভয়, মুসিবত ও বিপদ দিয়ে পরীক্ষা করে থাকেন। আমাদের মধ্যে অনেকেই আছেন, যারা অল্পতেই হতাশ হয়ে যাই। সামান্য বিপদে দিশেহারা হয়ে পড়ি। মহান আল্লাহ্‌ তাআলা এ সময়ে ধৈর্য্য ধারণ করতে বলেছেন। বিপদে পড়লে আল্লাহ্‌র কাছে সাহায্য চাইতে হয়। তিনিই একমাত্র উদ্ধারকারী। তিনি চাইলে মুহূর্তেই বিপদ থেকে মুক্তি দিতে পারেন।

করোনা মোকাবেলায় আমাদের দ্বিনী দায়িত্ব জনসমাগম পরিহার করা। আমরা এখন থেকে জামাতে নয়, ঘরে থেকে নামাজ আদায় করবো ইনশা’আল্লাহ্‌। প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসকে বৈশ্বিক মহামারি ঘোষণা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

পবিত্র কুরআনে আল্লাহ্‌ পাক ইরশাদ করেছেন- ‘মানুষের কৃতকর্মের জন্যই স্থলে ও জলে বিশৃঙ্খলা ছেয়ে গেছে। এর পরিণামে তিনি তাদের কোন কোন কর্মের শাস্তির স্বাদ তাদের ভোগ করাবেন, যাতে তারা আল্লাহর দিকে ফিরে আসে।’ (সুরা রূম, আয়াত : ৪১)

আমরা একের পর এক যেসব রোগব্যাধি ও ঐশী আজাবের সম্মুখীন হচ্ছি এর মূল কারণ হচ্ছে- আমাদের কৃতকর্মই।

যেহেতু আমাদের পাপ সর্বত্র ছেয়ে গেছে, তাই বিভিন্ন প্রাকৃতিক আজাব তা করোনা ভাইরাসের আক্রমণ বলুন বা ঘূর্ণিঝড় সিডর, বুলবুল বা ভূমিকম্প সবই মূলত আল্লাহ্‌’র পক্ষ থেকে সতর্ক সংকেত। আল্লাহ্‌ আমাদেরকে সতর্ক করছেন, তোমরা সহজ সরল পথ অবলম্বন কর। তাই আমরা ব্যক্তি জীবনে যে কাজই করিনা কেন তা যেন সৎ হয় ।

বিষয়টিকে এভাবেও বলা যায় : সমাজ ও দেশের বেশির ভাগ মানুষ যখন পাপ, ব্যাভিচার, অন্যায় এবং নিজ প্রভুকে ভুলতে বসে তখনই আল্লাহ্‌ তাঁর পক্ষ থেকে শাস্তি দেন। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ্‌ পাক ইরশাদ করেছেন- ‘আর তোমাদের কৃতকর্মের কারণই তোমাদের ওপর বিপদ নেমে আসে। অথচ তিনি অনেক কিছুই উপেক্ষা করে থাকেন।’ (সুরা শুরা, আয়াত : ৩০)

বর্তমান পরিস্থিতিতে অধিকহারে এই দোয়া পড়া উচিত :
اَللَّهُمَّ اِنِّىْ اَعُوْذُ بِكَ مِنَ الْبَرَصِ وَ الْجُنُوْنِ وَ الْجُذَامِ وَمِنْ سَىِّءِ الْاَسْقَامِ
উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিনাল বারাছি ওয়াল জুনুনি ওয়াল ঝুজামি ওয়া মিন সায়্যিয়িল আসক্বাম।’
অর্থ : ‘হে আল্লাহ! আপনার কাছে আমি শ্বেত রোগ থেকে আশ্রয় চাই। মাতাল হয়ে যাওয়া থেকে আশ্রয় চাই। কুষ্ঠ রোগে আক্রান্ত হওয়া থেকে আশ্রয় চাই। আর দুরারোগ্য ব্যাধি (যেগুলোর নাম জানিনা) থেকে আপনার আশ্রয় চাই।’ (আবু দাউদ, তিরমিজি)

اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ مُنْكَرَاتِ الأَخْلاَقِ وَالأَعْمَالِ وَالأَهْوَاءِ وَ الْاَدْوَاءِ
উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিন মুনকারাতিল আখলাক্বি ওয়াল আমালি ওয়াল আহওয়ায়ি, ওয়াল আদওয়ায়ি।’
অর্থ : হে আল্লাহ! নিশ্চয় আমি তোমার কাছে খারাপ (নষ্ট-বাজে) চরিত্র, অন্যায় কাজ ও কুপ্রবৃত্তির অনিষ্টতা এবং বাজে অসুস্থতা ও নতুন সৃষ্ট রোগ-ব্যাধি থেকে আশ্রয় চাই।’ (তিরমিজি)

কোনো এলাকায় বা দেশে যদি কোনো মহামারি ছড়িয়ে পড়ে সেক্ষেত্রে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম -এর নির্দেশ হল যে, সেখানকার অধিবাসী সে যেন অন্যত্র না যায়, এর ফলে অন্যত্রেও তা ছড়িয়ে যাওয়া সম্ভাবনা থাকে। যেমন হাদিসে এসেছে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন-
‘যখন কোনো এলাকায় মহামারি ছড়িয়ে পড়ে তখন যদি তোমরা সেখানে থাকো তাহলে সেখান থেকে বের হবে না। আর যদি তোমরা বাইরে থাকো তাহলে তোমরা সেই আক্রান্ত এলাকায় যাবে না।’ (বুখারি, মুসলিম)

করোনা মোকাবেলায়- “আমরা এখন থেকে জামাতে নয়, ঘরে থেকে নামাজ আদায় করবো ইনশা’আল্লাহ্‌।”